প্রকাশিত: ০৫/১০/২০২১ ৮:৪০ এএম

মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ::
সমাজের প্রতিটি সদস্যের গুরুত্ব আছে এবং প্রত্যেকের স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে। তাই প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান অনুযায়ী গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। মানুষকে তার স্তর অনুযায়ী মূল্যায়ন করা উচিত, কাউকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। গরিব ও অসহায় মুসলমানদের অবজ্ঞা-অবহেলা না করতে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি নিজেকে তাদের সংসর্গে রাখো, যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের দিক থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ো না। ’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ২৮)

কাউকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়। জুবায়ের ইবনে নুফাইর আল-হাদরামি (রহ.) বলেন, তিনি আবু দারদা (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা দুর্বল লোকদের খোঁজ করে আমার কাছে নিয়ে এসো। কেননা তোমরা তোমাদের মধ্যকার দুর্বল লোকদের অসিলায় রিজিক ও সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে থাকো। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৯৪)। অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, মুসআব ইবনে সাদ (রা.) বলেন, সাদ (রা.)-এর ধারণা ছিল, অন্যদের চেয়ে তাঁর মর্যাদা বেশি। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা দুর্বলদের (দোয়ার) অসিলায় সাহায্যপ্রাপ্ত ও রিজিকপ্রাপ্ত হচ্ছ। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৮৯৬)। বহু অবহেলিত মানুষ আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। রাসুল (সা.) বলেন, মাথায় উষ্কখুষ্ক চুল ও দেহে ধূলিমলিন দুইখানা পুরনো কাপড় পরিহিত এরূপ অনেক ব্যক্তি আছে, যার প্রতি লোকেরা দৃষ্টিপাত করে না। অথচ সে আল্লাহর নামে শপথ করে ওয়াদা করলে তিনি তা সত্যে পরিণত করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৫৪)

রাসুল (সা.) সমাজের মানুষকে গুরুত্ব দিতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন কালো নারী অথবা একটি যুবক (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) মসজিদে নববী ঝাড়ু দিত। একদিন রাসুল তাকে দেখতে পেলেন না। তিনি ওই নারী অথবা যুবকটির খোঁজ নিলেন। লোকেরা বলল, সে মৃত্যুবরণ করেছে। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে জানালে না কেন? বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা এই নারী বা যুবকের বিষয়টিকে তুচ্ছ ভেবেছিল। তিনি বলেন, তাকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে আমাকে দেখাও। তারা তাঁকে তার কবর দেখিয়ে দিল। তখন তিনি তার কবরে (কাছে গেলেন ও) জানাজার সালাত আদায় করেন। তারপর বলেন, এ কবরগুলো এর অধিবাসীদের জন্য ঘন অন্ধকারে ভরা ছিল। আর আমার সালাত আদায়ের ফলে আল্লাহ তাআলা এগুলোকে আলোকিত করে দিয়েছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৪৫৮; মুসলিম, হাদিস : ৯৫৬)

এখানে অন্যকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

অন্য হাদিসে এসেছে, জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম অথবা জান্নাতের কাছে এসে একটি প্রাসাদ দেখতে পেলাম। অতঃপর জিজ্ঞেস করলাম, এটি কার প্রাসাদ? তাঁরা (ফেরেশতারা) বললেন, এ প্রাসাদ ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর। আমি তার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলাম। কিন্তু শুধু তোমার আত্মমর্যাদাবোধ আমাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিল, যা আমার জানা ছিল। এ কথা শুনে ওমর (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কোরবান হোক! আপনার কাছেও আমি আত্মমর্যাদাবোধ প্রকাশ করব?’ (বুখারি, হাদিস : ৫২২৬)। এভাবে রাসুল (সা.) অন্যকে গুরুত্ব দিতেন।

পাঠকের মতামত

আজহারীর পরবর্তী মাহফিল যে স্থানে

সিলেটে যাচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনজুমানে খেদমতে কুরআন আয়োজিত ৩৬তম তাফসিরুল ...